পেসমেকার একটি ছোট ডিভাইস যা হার্টের অনিয়মিত স্পন্দন নিয়ন্ত্রণে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠায়। এটি ব্রাডিকার্ডিয়া ও হার্ট ব্লকের মতো সমস্যায় ব্যবহৃত হয় এবং রোগীকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সহায়তা করে।
জন্ম থকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের হৃদপিন্ড তালে তালে সংকুচিত এবং প্রসারিত হয়ে আমাদের সারা শরীরে রক্ত সরবরাহ করে চলে। হৃদপিন্ডের এই সংকোচন এবং প্রসারণের জন্য প্রয়োজন তড়িৎ বা ইলেক্ট্রিসিটি। প্রাকৃতিক ভাবে হৃৎপিন্ডের মধ্যে বর্তমান বিভিন্ন নোডগুলি (এস এ নোড, এ ভি নোড ইত্যাদি) এই তড়িৎ স্পন্দন বা ইলেকট্রিক ইমপালস উৎপন্ন করে। যখন কোনো কারণে এই নোডগুলি ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না তখন কৃত্রিম পেসমেকারের প্রয়োজন পরে। আজ আমরা এই নিবন্ধে কৃত্রিম পেসমেকার নিয়েই আলোচনা করবো।
পেসমেকার হল একটি ক্ষুদ্র ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যা কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া (হৃদযন্ত্রের ছন্দের সমস্যা) দূর করতে ব্যবহার করা হয়। এই ছোট্ট যন্ত্রটি বুকে বা পেটের উপরের দিকে, কখনো কখনো কলার বোনের নিচে স্থাপন করা হয়। যা ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস উৎপন্ন করে এবং ইলেকট্রোডের মাধ্যমে সেই ইম্পালস্ হৃদপিন্ডের পেশীতে পৌঁছায়। এতে হৃদস্পন্দন সঠিক হারে বজায় থাকে।
দুই ধরনের অ্যারিদমিয়ার চিকিৎসার জন্য পেসমেকার ব্যাবহার করা হয় -
পেসমেকার মেশিন হল একটি ছোট ব্যাটারি অপারেটেড ডিভাইস যা আমাদের হৃদস্পন্দনের হার অনুভব করে বুঝতে পারে যে সেটি প্রয়োজনের থেকে ধীরে নাকি দ্রুত চলছে। সেই অনুযায়ী পেসমেকার সঠিক গতিতে হৃদস্পন্দনের হারকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। বর্তমানে আধুনিক এই মেশিনগুলির ওজন সাধারনত 1 আউন্স বা 28 গ্রামের মত হয়। বেশিরভাগ মেশিনের দুটি অংশ থাকে।
সাধারণত বেশ কয়েক ধরনের পেসমেকার দেখতে পাওয়া যায়।যার মধ্যে রয়েছে -
নিম্নলিখিত উপসর্গ দেখা দিলে আপনার অবিলম্বে একজন কার্ডিওলজি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
রোগীর শরীরে পেসমেকার বসাতে হবে কিনা সেটা জানার জন্য ডাক্তারবাবু,
করার জন্য বলতে পারেন। টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রোগীর শরীরের পেসমেকার বসাতে হবে কিনা।
পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেলে করণীয় কাজগুলি হল :
পেসমেকার বসানোর অপারেসানের ধাপ গুলি হল :
পেসমেকার বসানোর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হলে রোগী কে ও-টি (অপারেসান রুম) থেকে বেডে নিয়ে যাওয়া হয় এবং অব্জারভেশনে রাখা হয়। এই সময় যদি বুকে ব্যাথা হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসককে জানানো অবশ্যই জরুরী। রোগী সম্পূর্ণ সজাগ হয়ে উঠলে তাকে কিছু খেতে বা পান করতে দেওয়া হয়।
অন্য যেকোনও অস্ত্রপচারের মত এক্ষেত্রেও কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে :
ভারতে পেসমেকারের সরবনিম্ন দাম ৪০,০০০ টাকা আসপাসে। বসাতে খরচ হতে পারে গড়ে ৫০,০০০ টাকা। আনুষঙ্গিক সব খরচ মিলিয়ে মোটামুটি কমবেশি ১ লক্ষ টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা মত খরচ পরতে পারে। অবশ্য স্থান বিশেষে এবং বেশ কিছু বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এর হেরফের হতে পারে।
যেহেতু পেসমেকার ব্যাটারিতে চলে তাই অন্যান্য ব্যাটারি-চালিত ডিভাইস গুলোর মতই পেসমেকারের ব্যাটারির চার্জও একসময় ফুরিয়ে যায়। সাধারণত এর ব্যাটারিগুলো এমন ভাবে তৈরী যাতে সেগুলো দীর্ঘদিন চলে। দেখা গেছে মাত্র ১% যন্ত্রে অসময়ে চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। তবে সাধারণত পেসমেকার প্রতিস্থাপনের ১০ বছর পর একবার চেক করা দরকার।
পেসমেকারের ব্যাটারি পরিবর্তন, পেসমেকার বসানোর মত জটিল প্রক্রিয়া নয়। এক্ষেত্রে ডাক্তারবাবু লোকাল্ অ্যানেসথেসিয়ার মাধ্যমে যেখানে জেনেরেটরটি আছে সেখানটা অবশ করেন। তারপর ছিদ্র করে পালস জেনারেটার টিকে বের করে আনেন। এর আগে লিডস থেকে জেনেরেটরটিকে আলাদা করে নেওয়া হয়। নতুন ব্যাটারিযুক্ত পালস জেনারেটার আবার আগের স্থানে বসিয়ে লিডস্ গুলো নতুন জেনারেটারের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। তারপর ছিদ্রটি কে যথাযথ পদ্ধতি তে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পেসমেকার প্রতিস্থাপনের পরবর্তী জীবনে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার, যেমন :
সবসময় আইডেন্টিটি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে যাতে বোঝা যায় শরীরে পেসমেকার আছে। বিশেষত বিমানবন্দরে, রেল স্টেশনে এক্স-রে বা মেটাল ডিটেক্টরে তল্লাশির সময় (দুর্ঘটনায় ইমার্জেন্সি চিকিৎসার ক্ষেত্রে, এই তথ্য কাজে আসবে)।
উচ্চচৌম্বক ক্ষেত্রের কাছে এলে পেসমেকার খারাপ হয়ে যেতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রা ও তড়িৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকলেও এটি খারাপ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই সেগুলো মাথায় রেখে চলতে হবে।
বেশিরভাগ পেসমেকারের ব্যাটারিগুলো ৭ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত চলে। এরপর ব্যাটারি প্রতিস্থাপন করতে হয়।
দেহে পেসমেকার বসানো হলে তার বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন -
তবে পেসমেকার প্রতিস্থাপনের পর ডাক্তারের পরামর্শ মত সাবধানতা মেনে চললে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন। কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
Written and Verified by:
Dr Anil Mishra is one of the most senior Cardiologist of Eastern who is known to do some of the firsts in new Cardiac procedures. He graduated from Calcutta National Medical College and received his post-graduate training in the United Kingdom. After achieving Membership of the Royal College of Physicians he trained in Cardiology at some of the leading cardiac centres of Europe – The Cardiothoracic Institute at National Heart Hospital, Brompton Hospital and London Chest Hospital in London.
He has wide experience in Cardiology and has performed more than 20,000 Coronary Angiographies (including radial route); more than 8000 Coronary Angioplasties and stenting, more than 3000 pacemaker surgery and other cardiac device implantations. He has a special interest in complex angioplasties, Pacemakers, CRT-D, AICD, and TAVI.
Similar Cardiology Blogs
Book Your Appointment TODAY
© 2024 BMB Kolkata. All Rights Reserved.