হৃদয় বা হৃৎপিণ্ড হল মানবশরীরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম। কিন্তু কী ভাবে এই হৃদয়ের যত্ন নিতে হবে সেই সম্পর্কে আমাদের অধিকাংশের স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই। উল্টে আধুনিক জীবনযাত্রায় হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। সমীক্ষা বলছে, হৃৎপিণ্ডের অসুখে অর্থাৎ হৃদরোগে মৃত্যুর হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।
হৃদয় বা হৃৎপিণ্ড হল মানবশরীরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম। কিন্তু কী ভাবে এই হৃদয়ের যত্ন নিতে হবে সেই সম্পর্কে আমাদের অধিকাংশের স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই। উল্টে আধুনিক জীবনযাত্রায় হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। সমীক্ষা বলছে, হৃৎপিণ্ডের অসুখে অর্থাৎ হৃদরোগে মৃত্যুর হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।
হৃৎপিণ্ড হল বুকের খাঁচায় সযত্নে রক্ষিত ছোট্ট পেশীবহুল অঙ্গ, যেটা পাম্পের মতো কাজ করে পুরো শরীরে রক্ত সঞ্চালন করছে অবিরত। প্রচলিত ধারণা হল যে বুকের বাম দিকে হৃৎপিণ্ড অবস্থিত, যেটা ঠিক নয়। হৃৎপিণ্ড আসলে রয়েছে বুকের মধ্যপ্রকোষ্ঠে ফুসফুস দু’টোর মাঝখানে। তবে এটি বাম দিকে তুলনায় স্ফীত। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের বাম নিলয় অন্যান্য প্রকোষ্ঠ থেকে শক্তিশালী হওয়ার কারণে (সারা দেহে রক্ত পাম্প করে পাঠায়) এটি বাম দিকে রয়েছে বলে অনুভূত হয়। পূর্ণবয়স্ক মানুষের হৃৎপিণ্ডের ওজন মোটামুটি ভাবে ২৫০-৩৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। হাতের মুঠোর চেয়ে একটু বড় আকারের হৃৎপিণ্ডের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৯ সেন্টিমিটার।
মানবশরীরের হৃৎপিণ্ড যেন একটা আস্ত বাড়ি- দেওয়াল, প্রকোষ্ঠ, দরজা বা কপাট, রক্তজালি বা সংবহন ব্যবস্থা, এমনকী বৈদ্যুতিক তরঙ্গ ব্যবস্থাও রয়েছে।
দেওয়াল- হৃৎপিণ্ডের পেশী বা দেওয়াল সঙ্কোচন, প্রসারনের মাধ্যমে সারা দেহে রক্ত সঞ্চালন করে। সেপটাম নামে একটি পেশীর স্তর হৃৎপিণ্ডকে বাম ও ডান দিকে ভাগ করেছে। হৃৎপেশী মূলত তিনটি স্তরে বিভক্ত- এন্ডোকার্ডিয়াম বা ভিতরের স্তর, মায়োকার্ডিয়াম বা মাঝের পেশীর স্তর ও এপিকার্ডিয়াম বা বহির্ভাগের আবরণ। এপিকার্ডিয়াম আসলে পেরিকার্ডিয়াম বা হৃদাবরণের একটা অংশ, যেটির মধ্যে উপস্থিত সেরাস বা তরল হৃদস্পন্দনের সময় হৃৎপিণ্ডের ঘর্ষণ কম করে।
প্রকোষ্ঠ- হৃৎপিণ্ড চারটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত, উপরে দু’টি অলিন্দ (আট্রিয়াম) ও নীচে দু’টি নিলয় (ভেন্ট্রিকল)। অলিন্দগুলি আন্তঃঅলিন্দ পর্দা এবং নিলয়গুলি আন্তঃনিলয় পর্দা দ্বারা পৃথক থাকে।
দরজা- ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মাঝে রয়েছে ত্রিপত্রক কপাটিকা বা ট্রাইকাস্পিড ভালভ। বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ের মাঝে রয়েছে দ্বিপত্র কপাটিকা বা ডাইকাস্পিড ভালভ। নিলয় থেকে ফুসফুস ও ধমনীতে রক্ত যাওয়ার পথেও দু’টি সেমিলুনার দরজা রয়েছে (আওর্টিক ভালভ, পালমোনারি ভালভ)।
রক্তজালি- পুরো হৃৎপিণ্ড জুড়ে অসংখ্য রক্তজালি বিরাজমান। অক্সিজেন সমৃদ্ধ শুদ্ধ রক্ত বহন করে যারা তাদের বলে ধমনী বা আর্টারি এবং অক্সিজেন শূন্য দূষিত রক্ত বহন করে শিরা। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের মাঝে করোনারি আর্টারি নামে ছোট ছোট ধমনীর একটা নেটওয়ার্ক রয়েছে, যারা হৃৎপিণ্ডের পুষ্টির জোগান দেয় বা পেশীর কোষকে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এককথায়, এরাই হৃৎপিণ্ডকে সচল রাখে।
বৈদ্যুতিক সঙ্কেত- ব্রেন থেকে বৈদ্যুতিক সঙ্কেতে হৃদপেশীর সঙ্কোচন-প্রসারনের চক্রটি চলতে থাকে অবিরাম। হৃৎপেশীর বুনন এমন ভাবে পরস্পর সংযুক্ত যে ব্রেন থেকে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত একটি কোষে পৌঁছলে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে যায় এবং তখন পুরো হৃৎপিণ্ড একসঙ্গে সংকুচিত-প্রসারিত হয়। হৃৎপিণ্ডের এক বার সঙ্কোচন (সিস্টোল) ও প্রসারণকে (ডায়াস্টোল) বলে হৃদস্পন্দন (হার্টবিট)। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের হৃদস্পন্দনের হার প্রতি মিনিটে ৭০-৮০ বার (গড় ৭২)। অর্থাৎ, একবার সঙ্কোচন ও প্রসারণে সময় লাগে ০.৮ সেকেন্ড।
হৃৎপিণ্ডের ডান অংশের কাজ হল পুরো দেহ থেকে ডান অলিন্দে অক্সিজেন শূন্য রক্ত সংগ্রহ করা এবং ডান নিলয়ের মাধ্যমে তা পাম্প করে ফুসফুসে শোধনের জন্য পাঠানো। ফুসফুসে গিয়ে রক্ত থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেরিয়ে যায় এবং অক্সিজেন যুক্ত হয়। এই অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ফুসফুস থেকে পৌঁছয় বাম অলিন্দে। বাম অলিন্দ থেকে সেই রক্ত বাম নিলয়ে যায় এবং সেখান থেকে মহাধমনী ও শাখাধমনীর মাধ্যমে পুরো দেহে সঞ্চালিত হয়। ধমনী থেকে শুদ্ধ রক্ত সরু ছোট ধমনী এবং সেখান থেকে আরও ক্ষুদ্র কৈশিকনালীর মাধ্যমে কোষে পৌঁছয়। অন্যদিকে কোষ থেকে অক্সিজেন শূন্য রক্ত ছোট শিরার (ভেনিউলস) ভেতর দিয়ে শিরা থেকে সুপিরিয়র ও ইনফিরিয়র ভেনাকোভা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ডান অলিন্দে পৌঁছয় এবং পুনরায় সেখান থেকে ফুসফুসে যায় পরিশোধিত হতে। এই ভাবে চক্রটি চলতে থাকে অবিরাম।
সাধারণ ভাবে হৃৎপিণ্ড সংক্রান্ত যে কোনও অসুখকেই হৃদরোগ বলা হয়ে থাকে। যেমন,
১) আর্টিয়াল ফিব্রিলেশন - বা অলিন্দে অনিয়মিত ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস্।
২) অ্যারিদমিয়া - হৃদস্পন্দনের হার খুব কম (মিনিটে ৬০-এর কম) বা বেশি (মিনিটে ১০০-র বেশি) বা অনিয়মিত হওয়া।
৩) কার্ডিওমায়োপ্যাথি - হৃৎপিণ্ডের পেশী অস্বাভাবিক মোটা বা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বা শক্ত হয়ে যাওয়া।
৪) কনজেসটিভ হার্ট ফেলিওর - হৃৎপিণ্ড দুর্বল হয়ে গিয়ে রক্ত পাম্প করা বা সংবহনে অসুবিধা।
৫) পেরিকার্ডিটিস, মায়োকার্ডিটিস, এন্ডোকার্ডিটিস - হৃদাবরণের স্তরগুলিতে লাইনিংয়ে প্রদাহ।
৬) ভালভুলার হার্ট ডিজ়িজ় - ভালভে সমস্যা।
৭) করোনারি আর্টারি ডিজ়িজ় - করোনারি আর্টারিতে মেদ জমে প্লাক তৈরি।
৮) মায়োকার্ডিয়াল ইনফাকশন বা হার্ট অ্যাটাক - প্লাক (ফ্যাট, কোলেস্টেরল) জমে করোনারি আর্টারি ব্লকের কারণে সংশ্লিষ্ট হৃদপেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে হৃদস্পন্দনের কাজ ব্যাহত হয়। একে বলে হার্ট অ্যাটাক।
হৃদরোগ কিন্তু আচমকা হয় না। অনেকদিন থেকেই শরীরকে জানান দেয়। কখনও আমরা বুঝেও উপেক্ষা করি আবার কখনও বুঝতে পারি না। বিভিন্ন হৃদরোগের লক্ষ্মণ ভিন্ন। যেমন কনজেনিটাল হার্ট ডিজ়িজ় জন্মের সময় বা শৈশবেই ধরা পড়ে। এক্ষেত্রে শিশুর ত্বক ও ঠোঁট নীলচে বা ফ্যাঁকাশে হয়ে আসে, ফুলে যায় পা, পেট, চোখের চারপাশ, নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। আবার কার্ডিওমায়োপ্যাথির ক্ষেত্রে দম ফুরিয়ে আসাটাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্মণ। ঘুমোতে যাওয়ার সময় বা ঘুম থেকে উঠে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, হৃদস্পন্দনের হার বাড়ে-কমে, পা, গোড়ালি ফুলে যায়, ক্লান্তি ও সবসময় ঘুম ঘুম ভাব থাকে। ভালভুলার হার্ট ডিজ়িজ়ে বুকে ব্যথার সঙ্গে ক্লান্তি ও শ্বাস নিতে অসুবিধা মূল লক্ষ্মণ। এন্ডোকার্ডিটিসের ক্ষেত্রে শুকনো কাশির সাথে জ্বর হয়। সঙ্গে শ্বাস নিতে অসুবিধা, ক্লান্তি এগুলোও থাকে। এই হৃদরোগগুলির উপসর্গ আগে থেকে জানান দিলেও মায়োকার্ডিয়াল ইনফাকশন বা হার্ট অ্যাটাক কিন্তু তাৎক্ষণিক এবং দ্রুত চিকিৎসার দরকার হয়। এতে বুকের মাঝখানে প্রচণ্ড ব্যথা হতে থাকে। ব্যথা বাম কাঁধ ও হাত এমনকী চোয়াল, দাঁতে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। পেটের উপর দিকেও ব্যথা হতে পারে। যেটাকে অনেকে গ্যাসের ব্যথা ভেবে ভুল করে। অনেক সময় আবার ততটা ব্যথা হয় না, যাকে বলে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক। বিশ্বে যত মানুষের হার্ট অ্যাটাক হয়, তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ-এর শিকার। নানা কারণে এটা হতে পারে- কারও ক্ষেত্রে হার্টের ব্যাথার অনুভূতি কমে যায়, যা ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি থেকে হতে পারে। কারও আবার হয়তো এন্ডরফিনের ক্ষরণ বেশি বলে ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বেশি হয়। পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক হয় বেশি।
১) বুকে ব্যথা - প্রায় সমস্ত হৃদরোগেই বুকে ব্যথা অন্যতম উপসর্গ।
২) দম ফুরিয়ে যাওয়া - শ্বাসকষ্টের সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ করে শ্বাস নিতে সমস্যা হলে বুঝতে হবে লক্ষ্মণ ভাল নয়। এমনিতে ফুসফুসের অসুখ থেকে শুরু করে এটা অন্য অনেক রোগের লক্ষ্মণ হতে পারে। তবে দম ফুরিয়ে যাওয়া হৃদরোগের অন্যতম লক্ষ্মণ।
৩) কাশি - দীর্ঘ দিন ধরে কাশির সমস্যা ভাল লক্ষ্মণ নয়। বিশেষ করে তার সঙ্গে যদি সাদা বা ঘোলাটে কফ বার হয় এবং কফের সঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়, তাহলে সতর্ক হতে হবে।
৪) অতিরিক্ত ঘাম হওয়া - তোমন কোনও কারণ ছাড়াই গলগল করে ঘামা হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষ্মণ হতে পারে। এর সঙ্গে বুক ধড়ফড় করলে সমস্যা গুরুতর।
৫) ক্লান্তি - অল্পে ক্লান্ত হওয়া হৃদরোগের লক্ষ্মণ। কোনও কাজ না করে স্রেফ বসে থেকেও ক্লান্ত হয়ে গেলে সচেতন হোন। হতে পারে আপনার হার্টের সমস্যা আছে।
৬) মাথা ব্যথা - মাথা ব্যথা হলে আমরা গ্যাসের সমস্যা থেকে অম্বল থেকে মাইগ্রেন নানারকমের নাম দিয়ে থাকি। কিন্তু হার্টঅ্যাটাকেরও পূর্ব লক্ষ্মণ হতে পারে মাথা ব্যথা।
৭) অজ্ঞান হয়ে যাওয়া - কাজ করতে করতে হঠাৎ করে জ্ঞান হারালে বা ব্ল্যাকআউট হয়ে গেলে তা হার্টের সমস্যার লক্ষ্মণ হতে পারে।
৮) অনিয়মিত নাড়ির গতি - দৌড়াদৌড়ি করলে বা অনেকক্ষণ ধরে ভারী কাজ করলে আমাদের পালস্ রেট বা নাড়ির গতি ওঠানামা করে। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়াই পালস্ রেট ওঠানামা করতে থাকলে তা চিন্তার বিষয়।
আধুনিক জীবনযাত্রায় হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। সচেতনতার অভাব যেখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা। যেমন, সারা দিন এক জায়গায় বসে যারা কাজ করেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। এক্ষেত্রে একটানা বসে না থেকে প্রতি ঘণ্টায় অন্তত পাঁচ মিনিট উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটাহাঁটি করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকবে। যোগব্যায়াম বা দিনে অন্তত এক মাইল হাঁটা দরকার। মদ্যপান ও ধূমপান পরিহার করাই ভাল। নিয়মিত রক্তের সিরাম ও লিপিড পরীক্ষা করতে হবে। হার্টের সমস্যা থাকলে অত্যধিক পরিশ্রম করা যাবে না বা বেশি মানসিক চাপ নেওয়া চলবে না। ব্লাড সুগার ও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সবশেষে কিন্তু সবচেয়ে জরুরি হল স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও পর্যাপ্ত ঘুম।
একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের হৃৎস্পন্দনের হার প্রতি মিনিটে (৬০ সেকেন্ডে) ৭০-৮০ বার (গড় ৭২)। অর্থাৎ একবার সঙ্কোচন ও প্রসারণে সময় লাগে ০.৮ সেকেন্ড।
আমাদের হৃৎপিণ্ডে চারটি ভালভ বা দরজা রয়েছে- ট্রাইকাস্পিড ভালভ (ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মাঝে), পালমোনারি ভালভ (ডান নিলয় ও ফুসফুসীয় ধমনীর মাঝে), মাইট্রাল ভালভ (বাম অলিন্দ ও নিলয়ের মাঝে), আ্যাওর্টিক ভালভ (বাম নিলয় ও মহাধমনীর মাঝে)।
Written and Verified by:
Similar Blogs
युवा और उच्च कोलेस्ट्रॉल: 30 की उम्र में छिपा ख़तरा
read moreबिना सीने में दर्द के हार्ट अटैक कैसे पहचानें? जानें जरूरी संकेत और बचाव
read moreBlood Oxygen Levels: Normal Range, Causes of Low SpO₂ & Tips to Improve
read moreVasoconstriction: How It Affects Blood Flow, Causes & Treatment
read moreBook Your Appointment TODAY
© 2024 BMB Kolkata. All Rights Reserved.