করোনারি ধমনী রোগের লক্ষণ, ঝুঁকি ও প্রতিরোধ পদ্ধতি
Home >Blogs >করোনারি ধমনী রোগের লক্ষণ, ঝুঁকি ও প্রতিরোধ পদ্ধতি

করোনারি ধমনী রোগের লক্ষণ, ঝুঁকি ও প্রতিরোধ পদ্ধতি

Cardiology | by Dr. Dhiman Kahali on 09/05/2023

Summary

করোনারি ধমনী রোগ একটি সাধারণ হৃদরোগ। এই অবস্থায় হৃদপিন্ডের রক্ত সরবরাহকারী প্রধান রক্তনালীগুলো (করোনারি ধমনী) হৃৎপিণ্ডের পেশী তে পর্যাপ্ত রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি পাঠাতে পারে না। হৃদপিণ্ডের ধমনী তে কোলেস্টেরল জমা এবং প্রদাহ সাধারণত করোনারি ধমনী রোগের কারণ। রক্ত প্রবাহে বাধাও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।

করোনারি ধমনী রোগ কি?

করোনারি ধমনী রোগ একটি সাধারণ হৃদরোগ। এই অবস্থায় হৃদপিন্ডের রক্ত সরবরাহকারী প্রধান রক্তনালীগুলো (করোনারি ধমনী) হৃৎপিণ্ডের পেশী তে পর্যাপ্ত রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি পাঠাতে পারে না। হৃদপিণ্ডের ধমনী তে কোলেস্টেরল জমা এবং প্রদাহ সাধারণত করোনারি ধমনী রোগের কারণ। রক্ত প্রবাহে বাধাও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।

করোনারি ধমনী রোগ একটি বহুল পরিচিত রোগ। তবে যতক্ষণ না হার্ট অ্যাটাক এর মতো সমস্যা হয় এই রোগের লক্ষণগুলো অনেক সময় চোখে পরে না। এই রোগের সম্বন্ধে সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।

করোনারি ধমনী রোগের লক্ষণ

করোনারি ধমনী রোগের লক্ষণগুলো প্রথমে পরিলক্ষিত নাও হতে পারে। ব্যায়ামের সময় খুব জোরে হৃদ স্পন্দন হলে ধমনীর রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। করোনারি ধমনী যত সরু হতে থাকে তত কম রক্ত ​​হার্টে যায়। সাথে সাথে লক্ষণগুলো আরও গুরুতর হতে থাকে।

করোনারি ধমনী রোগের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হল:

  • বুকে ব্যথা (এনজাইনা): রোগী বুকে চাপ বা টান অনুভব করতে পারেন। মনে হতে পারে যে কেউ তাদের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বুকে ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝামাঝি স্থানে বা বাম দিকে হয়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কাজ বা তীব্র আবেগের সময় এনজাইনা ঘটতে পারে। সাধারণত কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যথা চলে যায়। কিছু লোকের (বিশেষত মহিলাদের) মধ্যে, ব্যথা খুব কম সময়ের জন্য স্থায়ী কিন্তু তীক্ষ্ণ হয়। ঘাড়, বাহু এবং পিঠেও ব্যাথা অনুভূত হয়।
  • শ্বাসকষ্ট: রোগীর মনে হতে পারে যে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন না।
  • ক্লান্তি: হার্ট যদি সম্পূর্ণ শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত রক্ত ​​সরবরাহ করতে না পারে, তাহলে রোগী অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত বোধ করতে পারেন।
  • আচমকা হার্ট অ্যাটাক: করোনারি ধমনীতে বাধা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। এর পূর্ব লক্ষণ হল - বুকে ব্যথা বা চাপ, কাঁধ ও বাহুতে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি। মহিলাদের ক্ষেত্রে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো- ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ক্লান্তি। কিছু ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকে কোনো বিশেষ লক্ষণ না থাকতেও পারে।

করোনারি ধমনী রোগে কখন ডাক্তার দেখাবেন?

করোনারি ধমনী রোগ শুরু হয় যখন চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ হৃৎপিণ্ডের ধমনীর ভেতরের দেয়ালে জমা হয়। এই অবস্থাকে বলা হয় এথেরোস্ক্লেরোসিস। এই গঠনকে প্লাক বলা হয়। এতে ধমনী সংকীর্ণ হয়। রক্ত ​​​​প্রবাহ বাধা পায়। 

উচ্চ কোলেস্টেরল ছাড়া, করোনারি ধমনীর ক্ষতি হওয়ার অন্যান্য কারণগুলি হল:

  • অত্যধিক স্থুলতা (ওবেসিটি)
  • ডায়াবেটিস ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়ামের অভাব
  • ধূমপান বা তামাক ব্যবহার

সুতরাং এই সমস্যা গুলো থাকলে কার্ডিওলজি ডাক্তারের অবশ্যই পরামর্শ নিতে হবে।

করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি

করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • বয়স: বেশি বয়সে হার্টের ধমনীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং সরু হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। 
  • সেক্স: পুরুষদের সাধারণত করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। মেনোপজের পর মহিলাদের-ও এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • বংশগত ইতিহাস: পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস করোনারি ধমনী রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। আপনার বাবা বা ভাইয়ের ৫৫ বছর বয়সের আগে হৃদরোগ হয়ে থাকলে বা আপনার মা বা বোনের ৬৫ বছর বয়সের আগে হৃদরোগ থাকলে আপনার পক্ষে ঝুঁকি বেশি।
  • ধূমপান: ধূমপান হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যারা ধূমপান করেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। 
  • উচ্চ রক্তচাপ: অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ধমনীর ক্ষতি করতে পারে। এতে করোনারি ধমনী সংকীর্ণ হতে পারে, রক্ত ​​প্রবাহ ধীর হয়ে যেতে পারে।
  • উচ্চ কোলেস্টেরল: রক্তে অত্যধিক কোলেস্টেরল, এথেরোসক্লেরোসিস এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। 
  • অতিরিক্ত ওজন বা স্থুলতা: শরীরের অতিরিক্ত ওজন সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। অতিরিক্ত স্থুলতায় টাইপ-2 ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপও হতে পারে।
  • দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ: দীর্ঘমেয়াদী কিডনি রোগে থাকলে করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
  • পর্যাপ্ত ব্যায়াম এর অভাব: শারীরিক কার্যকলাপ সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়ামের অভাব করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। 
  • মানসিক চাপ: মানসিক চাপ ধমনীর ক্ষতি করতে পারে এবং করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। 
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট, লবণ এবং চিনি যুক্ত খাবার খেলে করোনারি আর্টারি ডিজিজ এর ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • অ্যালকোহল: অ্যালকোহল সেবন হার্ট পেশির ক্ষতি করতে পারে। এটি করোনারি ধমনী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ঘুম: খুব কম এবং অত্যধিক ঘুম উভয়ই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

কখনও কখনও করোনারি ধমনী রোগ এইসব কারণ ছাড়াই দেখা যায়। করোনারি ধমনী রোগের জন্য অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলি হল - 

  • ঘুমের সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া)
  • উচ্চ সংবেদনশীল সি-প্রতিক্রিয়াশীল প্রোটিন ( hs-CRP)
  • উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড
  • হোমোসিস্টেইন
  • প্রি-এক্লাম্পশিয়া
  • গর্ভাবস্থার অন্যান্য জটিলতা
  • কিছু অটো-ইমিউন রোগ (যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং লুপাস) 

করোনারি ধমনী রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতি:

স্বাস্থ্যকর জীবনধারা-র অভ্যাস করোনারি ধমনী রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, আমাদের এই অভ্যাস গুলো অনুসরণ করা উচিত - 

  • ধূমপান ত্যাগ করা। 
  • উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখা।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা।
  • কম চর্বিযুক্ত, কম লবণযুক্ত খাবার খাওয়া। 
  • শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাওয়া।
  • মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকা।

রোগ নির্ণয়

করোনারি ধমনী রোগ নির্ণয় বা নিরীক্ষণের জন্য কিছু বিশেষ পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যেমন -

আমাদের অভিজ্ঞ ডাক্তাররা আপনাকে সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসার মাধ্যমে করোনারি ধমনী রোগ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করতে পারেন। সঠিক সময় চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন। একটি সুন্দর জীবন উপভোগ করুন।

Written and Verified by:

Dr. Dhiman Kahali

Dr. Dhiman Kahali

Director Exp: 37 Yr

Interventional Cardiology

Book an Appointment

Dr Dhiman Kahali is associated with BM Birla Heart Research Centre as the Director of Interventional cardiology. With a total experience of 37 years, he is known as an expert in performing Angioplasties, Mitral Balloon Dilations, Peripheral Vascular and Carotid Interventions. Dr Kahali is the Ex Chairman of National Intervention Council, CSI, Ex Convenor of STEMI Council, CSI and Vice President of CSI. Being a National Scholar, he has several publications in National and International Journals and delivers more than 125 lectures every year in various forums across the globe.

Related Diseases & Treatments

Treatments in Kolkata

Cardiology Doctors in Kolkata

NavBook Appt.WhatsappWhatsappCall Now