Cardiology | by Dr. Dhiman Kahali | Published on 19/05/2023
আমরা সকলেই জানি যে আমাদের হৃৎপিণ্ড শরীরের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা সারাজীবন কাজ করতে থাকে। এতে সামান্য ত্রুটি সারাজীবনের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। যতক্ষণ এটি ঠিকমতো কাজ করে ততক্ষণ আমাদের শরীর কোনো সমস্যা ছাড়াই চলতে থাকে, কিন্তু এত কিছু জানার পরেও আপনি কি আপনার হৃদয়ের ঠিকমতো যত্ন নেন? এর উত্তর হয়তো ‘না’ হবে, কারণ যেভাবে আধুনিক জীবনধারা এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাস আমাদের জীবনে প্রবেশ করেছে, তাতে আমাদের হৃৎপিণ্ড ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে দুর্বল হতে শুরু করে এবং ৪৫ বছর বয়সের পর মানুষ হৃদরোগের শিকার হয়, খিঁচুনির মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়। অনেক কারণেই আমাদের হার্ট দুর্বল হতে শুরু করে, তাই দুর্বল হার্টের লক্ষণ বা উপসর্গ চেনা খুবই জরুরী।
আপনি অবশ্যই জানেন যে আমাদের হৃৎপিণ্ড অনেকগুলি ধমনীর সাথে সংযুক্ত এবং যদি কোনো ধমনী বন্ধ হয়ে যায় তবে আপনি আপনার বুকে তীব্র চাপ অনুভব করতে শুরু করেন। চাপের পাশাপাশি, আপনি ব্যথা এবং খিঁচুনি অনুভব করেন। এই পরিস্থিতিতে আপনার অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন।
যদি আপনি মনে করেন যে কয়েকদিন ধরে আপনার পেটে ব্যথা বা হজমের সমস্যা সহ বমি বমি ভাব বা বুক জ্বালা হচ্ছে, তাহলে বুঝবেন আপনার হার্ট দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং একটি গুরুতর সমস্যা হতে চলেছে।
আপনি যদি বেশ কয়েক দিন ধরে কাশি এবং সর্দিতে ভুগছেন এবং ক্রমাগত কফ থেকে থাকেন তবে আপনার অবিলম্বে একজন কার্ডিওলজি ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত। এ ছাড়া থুতুতে সাদা বা গোলাপি আঁচিল দেখা গেলে তা হার্ট ফেইলিউরের লক্ষণ।
আপনার যদি গত কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট হয়, তবে এটি হার্ট ফেইলিওর হওয়ার একটি প্রধান লক্ষণ।
পিঠ, কোমর, ঘাড় ও চোয়ালে লাগাতার ব্যথা ও আমাদের হৃৎপিণ্ডের দুর্বলতা নির্দেশ করে। এ ধরনের যেকোনো সমস্যা আমাদের হার্টের দুর্বলতা নির্দেশ করে।
যখন আমাদের হার্ট দুর্বল হয়ে যায় তখন আরও দ্রুত রক্ত পাম্প করার চেষ্টা করে আর তার ফলে অতিরিক্ত কাজ করতে শুরু করে দেয় যা হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তবে এটা একদিনে ঘটে না, দীর্ঘ সময়ের একত্রিত ফল এটি।
খাদ্য স্পেশালিষ্টরা বলেন, যেসব খাবারে বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি থাকে সেসব খাবার খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। কিছু খাবার যেমন দুধ, দই, মাখন, চিজ, মাংস, কেক, বিস্কুট ও তেল জাতীয় খাবার ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে।
মাটিতে বসে সবার প্রথম দু’টি পা সামনের দিকে সম্পূর্ণ ছড়িয়ে রাখুন। এবার পাদু’টি সম্পূর্ণ ছড়িয়ে রাখা অবস্থায় সামনের দিকে ঝুঁকে পায়ের আঙুলগুলি হাত দিয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। দেখুন ছুঁতে পারলেন কিনা।
যদি সহজে আঙ্গুল দিয়ে পাগুলি ছুঁতে পারেন, তাহলে আপনার হার্টের স্বাস্থ্য একেবারে ঠিক আছে তা বুঝে নিতে হবে। আর যদি না পারেন, তাহলে বুঝবেন যে আপনার রক্তপ্রবাহে কোনো সমস্যা আছে বা আপনার ব্লাড ভেসেল ঠিক নেই। আর যদি এমন হয়, তাহলে আর দেরি করবেন না, তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সেদিকে যত্ন নেয়া শুরু করুন।
বাড়িতে হার্ট রেট পরীক্ষা করার জন্যে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি সহজে করতে পারেন:
১) প্রথমে আপনার ডানহাতের প্রথম দুই আঙ্গুল, অর্থাৎ তর্জনী ও মধ্যমা আঙুলটি প্ৰাম হাতের কব্জিতে রাখুন। এরপর, কব্জির ওপর আঙ্গুলগুলি হালকাভাবে চাপুন যাতে একটি হালকা কাঁপুনি অনুভব করেন। আপনি যে কম্পনগুলি অনুভব করছেন তার একটি স্পন্দন একটি হৃদস্পন্দনের সমতুল্য। এবারে ঘড়ি দেখুন এবং 20 সেকেন্ডের মধ্যে হার্টবিট গণনা করুন এবং সেই সংখ্যাটি 3 দ্বারা গুণ করলে আপনি আপনার হার্ট রেট গণনা করতে পারেন।
২) দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো ঘরের নাদির সাহায্যে হৃদস্পন্দন নির্ণয়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার হাতের আঙুলগুলি ঘাড়ে চেপে ধরুন, আপনার উইন্ডপাইপের পাশে। দেখবেন আপনি ভাবে স্পন্দন অনুভব করবেন। এটিই হলো আপনার হৃদস্পন্দন, যা সহজে স্টপওয়াচের সাহায্যে গণনা করতে পারেন।