সাইনাসের সংক্রমণ (সাইনোসাইটিস): কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা
Home >Blogs >সাইনাসের সংক্রমণ (সাইনোসাইটিস): কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

সাইনাসের সংক্রমণ (সাইনোসাইটিস): কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

Summary

সাইনাস হল আমাদের করোটির বা মাথার খুলির অন্তরস্থ চার জোড়া ফাঁকা প্রকোষ্ঠ (স্পেস)। এই প্রকোষ্ঠ গুলির স্থান আমাদের কপাল, চোখ, নাক ও গালের নিচে। এরা নাসারন্ধ্রের সাথে সংযুক্ত এবং সাধারণত বাতাসে পূর্ণ থাকে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ভাইরাস সংক্রমণ, ছত্রাক (ফাঙ্গাল) সংক্রমণ এবং অ্যালার্জির কারনে প্রকোষ্ট গুলির ভিতরের আস্তরণকারী টিস্যুতে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। টিস্যু গুলি ফুলে যায়। একেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় সাইনোসাইটিস বলে। 

একটি সাইনাস সংক্রমণ কি?

সাইনাস হল আমাদের করোটির বা মাথার খুলির অন্তরস্থ চার জোড়া ফাঁকা প্রকোষ্ঠ (স্পেস)। এই প্রকোষ্ঠ গুলির স্থান আমাদের কপাল, চোখ, নাক ও গালের নিচে। এরা নাসারন্ধ্রের সাথে সংযুক্ত এবং সাধারণত বাতাসে পূর্ণ থাকে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ভাইরাস সংক্রমণ, ছত্রাক (ফাঙ্গাল) সংক্রমণ এবং অ্যালার্জির কারনে প্রকোষ্ট গুলির ভিতরের আস্তরণকারী টিস্যুতে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। টিস্যু গুলি ফুলে যায়। একেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় সাইনোসাইটিস বলে। 

সাইনোসাইটিস-এর কারনে সাইনাসের প্রকোষ্ঠ গুলিতে তরল (মিউকাস) পদার্থ জমে এবং প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। ফলস্বরূপ মুখে চাপ এবং ব্যথার অনুভূতি হতে পারে। নাক বন্ধ হয়ে যায়। নাক দিয়ে জল ঝরে। এছাড়াও অন্যান্য উপসর্গ সৃষ্টি হতে পারে। সাধারন সর্দি-কাশি থেকেও সাইনাসের প্রদাহ হতে পারে। সাইনোসাইটিস-কে অনেক সময় রাইনো-সাইনোসাইটিস-ও বলা হয়।

সাইনোসাইটিসের প্রকারভেদ

কতক্ষণ সময় ধরে প্রদাহ স্থায়ী হচ্ছে (তীব্র, সাব-একিউট, দীর্ঘস্থায়ী বা পুনরাবৃত্ত-তীব্র) এবং কীসের কারণ (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক সংক্রমন) প্রদাহের সৃষ্টি হয়েছে সেই অনুসারে সাইনোসাইটিস কে বিভিন্ন প্রকারে ভাগ করা হয়। 

  • তীব্র সাইনোসাইটিসের লক্ষণগুলি (নাক বন্ধ হওয়া, নাক থেকে জল ঝরা, মুখের ব্যথা/চাপ এবং গন্ধের অনুভূতি কমে যাওয়া) চার সপ্তাহের-ও কম সময় ধরে থাকে। এটি সাধারণত সর্দি-কাশির মতো ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়।
  • সাব-একিউট সাইনোসাইটিস এর লক্ষণগুলি চার থেকে বারো সপ্তাহ স্থায়ী হয়।
  • দীর্ঘস্থায়ী সাইনোসাইটিসের লক্ষণগুলি কমপক্ষে বারো সপ্তাহ স্থায়ী হয়। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে ঘটে।
  • পুনরাবৃত্ত-তীব্র সাইনোসাইটিসের লক্ষণ গুলি এক বছরে চার বা তার বেশি বার ফিরে আসে। সাধারণত প্রতিবার দুই সপ্তাহের কম সময়ের জন্য স্থায়ী হয়।

সাইনাস সংক্রমণের লক্ষণ

দীর্ঘস্থায়ী সাইনোসাইটিসের সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • নাকের প্রদাহ
  • নাক থেকে ঘন, বিবর্ণ স্রাব (নাক দিয়ে জল পড়া)
  • গলায় শ্লেষ্মা জমা হওয়া (পোস্টনাসাল ড্রিপ), কাশি
  • নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা
  • চোখ, গাল, নাক বা কপালের চারপাশে ব্যথা এবং ফোলা ভাব
  • গন্ধ ও স্বাদের অনুভূতি কমে যাওয়া

অন্যান্য লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে:

  • কানের ব্যথা
  • মাথাব্যথা
  • আপনার উপরের চোয়াল এবং দাঁতে ব্যাথা
  • গলা ব্যথা
  • নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ
  • ক্লান্তি

সাইনাস সংক্রমণের কারণ

সাইনাসের সংক্রমণের বিভিন্ন কারণ গুলি হল -

  • ভাইরাস সংক্রমণ 
  • ছত্রাক সংক্রমণ 
  • সাইনাস প্রকোষ্ঠে অ্যালার্জি 
  • সাধারণ সর্দি
  • ইনফ্লুয়েঞ্জা 
  • স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
  • হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
  • মরাক্সেলা ক্যাটারেলিস ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।

কিছু মানুষ-দের অন্যদের তুলনায় সাইনোসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • নাকের এলার্জি
  • হাঁপানি
  • নাকের পলিপ 
  • নাকের সেপ্টাম টিস্যুতে চ্যুতি 
  • নিয়মিত ধূমপানের অভ্যাস
  • দুর্বল ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
  • এইচআইভি বা ক্যান্সারের কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের ব্যবহার

কিভাবে সাইনাসের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়?

ডক্টর অথবা স্বাস্থ্যসেবা-কর্মী রোগীর বর্তমান এবং অতীত লক্ষণের উপর ভিত্তি করে সাইনোসাইটিসের সনাক্তকরণ করেন। নাকের ভিতরে দেখতে এন্ডোস্কোপ যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজন অনুসারের বিশেষজ্ঞ ডক্টরের (যেমন ENT বা কান, নাক এবং গলা বিশেষজ্ঞ) সাথেও পরামর্শ করা যেতে পারে। 

সাইনোসাইটিস নির্ণয়ের জন্য নির্দিষ্ট পরীক্ষা

  • নাকের এন্ডোসকপি।
  • নাসিকা রন্ধ্র থেকে নমুনা (নাসাল সোয়াব) সংগ্রহ এবং জীবাণুর অস্তিত্বের জন্য পরীক্ষা। 
  • নাসাল স্ক্যান (কম্পিউটেড টমোগ্রাফি / CT) বা ইমেজিং।
  • অ্যালার্জির পরীক্ষা। 
  • বায়োপসি বা নাক থেকে টিস্যুর নমুনা নিয়ে পরীক্ষা।

সাইনোসাইটিস এর চিকিৎসা 

সাইনোসাইটিসের প্রকারভেদের অপর নির্ভর করে একাধিক চিকিৎসার বিকল্প রয়েছে। সাধারন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হিসাবে

  • নাসাল ডিকনজেসটেন্ট (জমে যাওয়া নাক পরিস্কার)-এর ব্যবহার।
  • ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ঠান্ডা এবং অ্যালার্জি ওষুধ।
  • নাসাল স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার।
  • প্রচুর জল পান (হাইড্রেশন)।

সাইনোসাইটিসের উপসর্গ 10 দিন পরে না কমে গেলে, ইএনটি স্পেসিলাইস্ট ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা অপরিহার্য। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সম্ভাব্য চিকিৎসা প্রণালী হতে পারে -

  • অ্যান্টিবায়োটিক।
  • ওরাল বা টপিক্যাল ডিকনজেসটেন্ট।
  • প্রেসক্রিপশন ইন্ট্রা-নাসাল স্টেরয়েড স্প্রে। 
  • টপিকাল অ্যান্টিহিস্টামিন স্প্রে বা ওরাল মেডিসিন।
  • লিউকোট্রিন-প্রতিরোধক মেডিসিন।
  • নাকের গঠনগত সমস্যার চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার।

সাইনোসাইটিস প্রতিরোধ করা যায় কি ভাবে?

সাইনাস সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি কমানোর উপায় গুলির মধ্যে রয়েছে:

  • স্যালাইন (লবণাক্ত জল) দিয়ে নাক ধোয়া।
  • অ্যালার্জি প্রতিরোধে ব্যবস্থা। ধুলো, ধোঁয়া এবং ফুলের পরাগের সংস্পর্শ এড়ানো।
  • ভালভাবে সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া।
  • অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস (যেমন নাকের ভিতরে আঙ্গুল) না দেওয়া। 
  • ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করা।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য

 

প্রঃ সাইনোসাইটিস হলে কী করা উচিত?

সাইনোসাইটিস সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে 10 দিন স্থায়ী হয়। এই সময় নিজেরাই সাইনাসের অবস্থার যত্ন নিতে পারেন। সাধারণত ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ এবং ঘরোয়া চিকিৎসা করতে পারেন। যদি এর থেকে বেশি সময় সাইনোসাইটিসের লক্ষণ থাকে তাহলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।&

প্রঃ আমার কখন ইমারজেন্সি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত?

যদি আপনি গুরুতর সংক্রমণের লক্ষণগুলি অনুভব করেন, যেমন:

  • তীব্র জ্বর (103 ডিগ্রি ফারেনহাইট/40 ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি)।
  • মানসিক বিভ্রান্তি বা অন্যান্য মানসিক পরিবর্তন।
  • দৃষ্টি শক্তির পরিবর্তন।
  • চোখের চারপাশে ব্যথা বা ফোলা।
  • খিঁচুনির অনুভূতি।
  • ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া।

প্রঃ আমার ডাক্তারকে কি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত?

সাইনোসাইটিস হলে সাধারণ যে প্রশ্নগুলি চিকিৎসক কে জিজ্ঞাস করা যায় - 

  • কীভাবে বাড়িতে সাইনাস সংক্রমণের চিকিৎসা করতে পারি?
  • কি ওষুধ সেবন করব?
  • সংক্রমণ না কমলে কখন আবার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে?

Written and Verified by:

Dr. Saibal Das

Dr. Saibal Das

Consultant - ENT Exp: 26 Yr

ENT

Book an Appointment

Similar Blogs

बच्चों में टॉन्सिलिटिस: लक्षण और उपचार

बच्चों में टॉन्सिलिटिस: लक्षण और उपचार

read more
ऑटोमायकॉसिस : कारण, लक्षण और उपचार

ऑटोमायकॉसिस : कारण, लक्षण और उपचार

read more
इओसिनोफिलिया क्या है? – कारण, लक्षण और घरेलू उपचार

इओसिनोफिलिया क्या है? – कारण, लक्षण और घरेलू उपचार

read more
Your Comprehensive Guide to Sinusitis

Your Comprehensive Guide to Sinusitis

read more

View more

Book Your Appointment TODAY

Treatments in Kolkata

ENT- Otolaryngology Doctors in Kolkata

NavBook Appt.WhatsappWhatsappCall Now