নিউমোনিয়া হল এক ধরণের ফুসফুসের প্রদাহ। আমাদের ফুসফুসের আলভিওলি বা ছোট ছোট বায়ু থলিতে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে এই প্রদাহের সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর পৃথিবীতে লক্ষাধিক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। তার মধ্যে প্রায় শতকরা 23 জন ভারতবর্ষে থেকে। বিশেষত শীতকালে শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হার প্রায় 14 থেকে 30%। তাই আমাদের জানতে হবে কি ভাবে এই রোগ থেকে দূরে থাকা যায়, প্রতিরোধ করা যায় এবং দ্রুত নিরাময় করা যায়।
নিউমোনিয়া হল এক ধরণের ফুসফুসের প্রদাহ। আমাদের ফুসফুসের আলভিওলি বা ছোট ছোট বায়ু থলিতে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে এই প্রদাহের সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর পৃথিবীতে লক্ষাধিক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। তার মধ্যে প্রায় শতকরা 23 জন ভারতবর্ষে থেকে। বিশেষত শীতকালে শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হার প্রায় 14 থেকে 30%। তাই আমাদের জানতে হবে কি ভাবে এই রোগ থেকে দূরে থাকা যায়, প্রতিরোধ করা যায় এবং দ্রুত নিরাময় করা যায়।
যে কোন রোগের লক্ষণ জানা থাকলে সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া অনেক সহজ হয়। নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য। এই লক্ষণগুলি সংক্রমণের পরে ধীরে ধীরে শরীরে প্রকাশ পেতে পারে।
এর মধ্যে একাধিক লক্ষণ দেখা গেলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। নিউমোনিয়ায় সর্বাধিক যে উপসর্গ গুলি দেখা যায় সে গুলি হোল কাশি (79–91%), জ্বর (71–75%) এবং ক্লান্তি(90%)।
বিভিন্ন জীবাণু নিউমোনিয়ার কারণ হতে পারে। তাদের মধ্যে বায়ু-বাহিত ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস অগ্রগণ্য। আমাদের শরীরর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণত এই জীবাণু দের থেকে আমাদের রক্ষা করে। কিন্তু কোন কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা দুর্বল হলে, সংক্রমণ হয়। এরফলে ফুসফুস ফুলে যায় এবং সেখান থেকে তরল শ্লেষ্মা (mucus) বের হয়।
প্রধান প্রধান নিউমোনিয়া সৃষ্টি কারক জীবাণু হোল -
ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়ার সংক্রমণ হসপিটাল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গুলি থেকেও ছড়াতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে অন্য রোগের চিকিৎসা করাতে এসে রোগীরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন।
এই রোগের সংক্রমন প্রধানত উচ্চ শ্বাস নালীতে হয়। শ্বাস যন্ত্রের এই অংশ শ্বাসনালী এবং ফুসফুস কে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে। সংক্রমিত উচ্চ শ্বাসনালীর প্রতিরোধী ক্ষমতা কমে যায়। ধীরে ধীরে অপর থেকে শ্বাসনালীর নিম্নাংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে। নিউমোনিয়ার সংক্রমণের মাত্রা জীবাণু সংক্রামক ক্ষমতার উগ্রতা (virulence), রোগীর ইমুনিটির অপর নির্ভর করে। কাশি ও হাঁচির সাথে সংক্রামিত রোগীর নাক এবং মুখ থেকে থেকে জীবাণুযুক্ত তরলের ক্ষুদ্র ফোঁটা (droplets) বাতাসে ছড়িয়ে পরে। অন্য কেউ প্রশ্বাসের সময় জীবাণুযুক্ত বাতাস গ্রহন করলে তার শরীরে সংক্রমন ছড়িয়ে পরতে পারে। এই জন্য নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নাক-মুখ ঢেকে রাখতে বলা হয়।
পূর্ণ সংক্রমনের পর সাধারণত নিউমোনিয়া 2 থেকে 3 সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হলে নিউমোনিয়া পুরোপুরি নিরাময় হতে 2 থেকে 3 সপ্তাহ লেগে যায়। তবে যদি রোগীর অবস্থা খারাপ থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রে সেরে উঠতে এর থেকে বেশি সময় লাগতে পারে।
বয়স্ক মানুষদের (বিশেষ করে পঁয়ষট্টি বছরের বেশি বয়সীদের) এবং যাদের হার্ট, ফুসফুস, কিডনি বা স্নায়বিক দুর্বলতা যুক্ত মানুষদের সেরে উঠতে অনেকটা সময় লেগে যায়।
রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে নিউমোনিয়া-জনিত সমস্যা বার তে পারে।
কিছু বিশেষ রোগ (যেমন ক্যান্সার, আইচ আই ভি) ইমিউনিটি দুর্বল করে দেয়। এই ধরনের রোগী দের নিউমোনিয়া থেকে সেরে উঠতে বেশি সময় লাগে।
নিউমোনিয়ার সংক্রমণ এবং তার তীব্রতা নির্ণয় করার জন্য ডাক্তাররা বিশেষ কিছু ল্যাব টেস্টের নির্দেশ দেন। যেমন -
সাধারণ নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় ফুসফুসে প্রদাহের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। বাড়িতে থেকেই নিরাময় করা সম্ভব। রোগের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেলে ডাক্তাররা রোগী কে হসপিটালে ভর্তি করতে বলেন। প্রধান চিকিৎসা প্রণালী গুলি হোল -
নিউমোনিয়া প্রতিরোধের কার্যকরী উপায় গুলি হোল -
2 মাসের কম বয়সী শিশুদের জন্য নিউমোনিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এই রকম ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিলে রোগী কে দ্রুত হসপিটালে ভর্তি করা দরকার। এছাড়া অন্যান্য কর্তব্য গুলি হোল -
নিউমোনিয়ার সাথে লড়াই করার জন্য সুষম খাবার অত্যন্ত দরকার। শরীরে শক্তির জোগান বেশি প্রয়োজন। তাই কি খাওয়া উচিত তা নিচে দেওয়া হল -
বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে নিউমোনিয়া সাধারণত মারাত্মক হয়ে ওঠেনা। শিশু এবং বেশি বয়স্কদের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া দরকার। শীতকালের শুকনো আবহাওয়ায় নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা বেরে যায়। তাই এই সময় শ্বাসনালী কে আর্দ্র রাখা খুবই জরুরী। এতে শ্বাসনালীতে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই রোগ সম্বন্ধে জানুন এবং লোক কে জানান। প্রয়োজনে পালমোনোলজি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Written and Verified by:
Dr. Shyam Krishnan is a Consultant in Pulmonology at CMRI, Kolkata, with over 10 years of experience. He specializes in interventional pulmonology, bronchoscopy, thoracic ultrasound, airway stent replacement, and lung infection management.
© 2024 CMRI Kolkata. All Rights Reserved.