টিউবারকিউলোসিস (টিবি) রোগের কারণ একটি ব্যাকটেরিয়া, যার নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ফুসফুসে আক্রমণ করে, কিন্তু টিবির ব্যাকটেরিয়া দেহের যে কোনও অঙ্গেই রোগ ছড়াতে পারে যার মধ্যে পড়ে কিডনি, মেরুদণ্ড ও মস্তিষ্ক। তবে যাদের দেহে টিবির ব্যাকটেরিয়া থাকে তারা সবাই অসুস্থ হয় না।
যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না হয় তাহলে এই রোগের কারণে মৃত্যও হতে পারে। যদি টিবি রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসার বিষয়টি জানা থাকে তাহলে সেটা খুবই সহায়ক হয়। এই ব্লগে আমরা যক্ষা রোগ বা টিবির কারণ , লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করব।
ইংরেজি ভাষায় টিবিকে টিউবারকিউলোসিস বলে। টিবি আসলে সংক্রামক রোগ যা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের অনেক রকম লক্ষণ দেখা যায়। সেগুলি এই ব্লগের মাধ্যমে আপনি সহজেই জানতে পারবেন। আগেই আমরা বলেছি যে, এই রোগ ছড়ায় একটি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে যার নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। টিবি ছড়ানোর পিছনে আসল কারণ হল বাতাস। কাশি, হাঁচি কিংবা লালা মারফৎ টিবি একজনের থেকে অন্যজনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই ব্যাকটেরিয়া আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে। তবে এই রোগটি আমাদের দেহের সেই সব অংশের ক্ষতি করে যেখানে রক্ত ও অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি। সেকারণেই টিবি বেশি হয় ফুসফুসে। ফুসফুসের টিবিকে আবার পালমোনারি টিবিও বলা হয়।
একজন ব্যক্তির নানা ধরনের টিবি হতে পারে। যেমন
টিবির ব্যাকটেরিয়া শরীরের কোন অংশে বাড়ছে তার ওপর টিবি রোগের লক্ষণগুলি নির্ভর করে। সাধারণভাবে এই রোগের লক্ষণগুলি আলাদা। তবে হাড়ের টিবির কিছু লক্ষণ গলার টিবির লক্ষণের চেয়ে আলাদা। টিবির ব্যাকটেরিয়া সাধারণত বেড়ে ওঠে ফুসফুসে (পালমোনারি টিবি)। টিবি হলে নীচের লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:
অনেকে ভুল বোঝেন যে নারী ও পুরুষের মধ্যে যক্ষ্মার লক্ষণ আলাদা। না, মোটেও সেরকম নয়। যদি আপনার উপরে উল্লিখিত উপসর্গগুলির কোনটি থাকে, তাহলে আমরা আপনাকে অবিলম্বে একজন পালমোনোলজি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দিই।
ব্যাকটেরিয়ার কারণেই টিবি হয়। ঠান্ডা কিংবা ফ্লুয়ের মতো এই ব্যাকটেরিয়া বাতাসে ছড়ায়। যাদের টিবি হয়েছে এমন লোকের সংস্পর্শে এলেই তবে কারো টিবি হতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যদি আপনি এমন একজনের সঙ্গে হাঁটেন যার টিবি হয়েছে, এবং তিনি যদি মুখে চাপা না দিয়ে হাঁচেন, এবং হাঁচি থেকে বেরোনো ড্রপলেট আপনার মুখের কাছে এসে পড়ে, তাহলে আপনারও টিবি হতে পারে।
কী ধরনের টিবি হয়েছে তার ওপর নির্ভর করবে চিকিৎসার ধরন। যদি আপনার সুপ্ত বা প্রচ্ছন্ন টিবি থাকে,তাহলে ব্যাকটেরিয়াকে মারার জন্য চিকিৎসক আপনাকে কিছু ওষুধ দিতে পারে যাতে সংক্রমণ সক্রিয় হয়ে উঠতে না পারে। আইসোনাইজড, রেফাপ্যানটিন বা রিফ্যামপিন সল্ট থেকে আলাদাভাবে কিংবা এগুলির মিশ্রণ থেকে তৈরি ওষুধ আপনাকে দেওয়া হতে পারে। এই ধরনের ওষুধগুলির নির্দিষ্ট একটা কোর্স আছে এবং সেই কোর্স শেষ করাটা বাধ্যতামূলক। যদি আপনার মনে হয় টিবির কোনও লক্ষণ আপনার দেহে সক্রিয় তাহলে তখনই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে কীভাবে রোগের চিকিৎসা করা হবে সেই পরামর্শ চান।
এছাড়াও, চিকিৎসকেরা কয়েকটি ওষুধের মিশ্রণ দিতে পারেন। সাধারণত চিকিৎসকেরা এমন মিশ্রণের ওষুধ দেন যেগুলির নাম অ্যাটমসস্ফিয়ার, আইসোনাইজড, পাইরোজেনমাইড এবং রিফ্যামপিন। এই সব ওষুধের কোর্স চলতে পারে ৬ থেকে ১২ সপ্তাহ। একইসঙ্গে পালমোনারি ও এক্সট্রা পালমোনারি টিবির ক্ষেত্রে, ওষুধের কোর্স চলে আর একটু বেশি দিন।
যদি আপনার অন্য কোনও সংক্রমণ থেকে থাকে কিংবা যদি আপনি অন্য কোনও ওষুধ খান, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসককে সেকথা জানাতে হবে। তাছাড়া রোগী নিজে থেকে কোনও ওষুধের কোর্স বন্ধ করবেন না। যদি মাঝপথে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন তাহলে ব্যাকটেরিয়া ফের সক্রিয় হবে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।
টিবির চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে টিবি ঠেকানোটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। টিবি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য নীচের পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে—
টিবি হলে সবচেয়ে বেশি যা মেনে চলতে হবে তা হল, চিকিৎসকের কথা মান্য করা এবং যথাযথ সময়ে চিকিৎসার কোর্স শেষ করা।
চিকিৎসার দ্বারা টিবিকে প্রায় চিরতরে সারিয়ে তোলা সম্ভব। ৬ মাসের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স অবশ্যই নিতে হবে। নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। কারণ কয়েক ধরনের টিবিতে কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক কাজে দেয় না।
যাদের টিবি হয়েছে তাদের অধিকাংশকেই অন্তত ৬ মাস টিবির ওষুধ খেতে হবে। তবেই রোগ সারবে।
যদি আপনার থেকে অন্যদের টিবির ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে হয় তাহলে আপনাকে অন্তত ২ বা ৩ সপ্তাহ টিবির ওষুধ খেতে হবে। যখন আপনি কিছুটা সুস্থ বোধ করবেন তখনও পুরো সেরে ওঠার জন্য ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। অন্তত ৬ মাস ধরে আপনাকে নানা ধরনের বড়ি খেয়ে যেতে হবে।
টিবি মূলত চার ধরনের হয়। যেমন—
লেটান্ট টিবি
অ্যাকটিভ টিবি
পালমোনারি টিবি
একস্ট্রা পালমোনারি টিবি
টিবি একটি সংক্রামক রোগ যা টিবি আক্রান্ত কোনও রোগীর সংস্পর্শে এলে ছড়ায়। টিবি আছে আপনি এমন কারোর সংস্পর্শে এলে, খুবই সম্ভাবনা রয়েছে যে আপনিও ওই রোগে ভুগতে পারেন।
টিউবারকিউলোসিস হয় একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে যার নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। এটা একটা সংক্রামক ব্যাকটেরিয়া, যা ওই ব্যাকটেরিয়ায় দূষিত বাতাসের সংস্পর্শে এলে যে কারোরই হতে পারে।
হ্যাঁ, টিবি হয়ে উঠতে পারে ঘাতক রোগ। এই রোগের ব্যাকটেরিয়া ফুসফুস, মস্তিষ্ক, হাড় এবং শরীরের অন্য অঙ্গগুলিতেও ছড়াতে পারে।
Written and Verified by:
Dr. Raja Dhar is the Director & Head of Pulmonology Dept. at BM Birla Heart Hospital and CMRI Hospital, Kolkata, with over 27 years of experience. He specializes in interstitial lung disease, asthma & allergy, COPD, sleep medicine, advanced lung function services, interventional & diagnostic pulmonology, rare stroke & orphan lung diseases, and all disciplines of respiratory medicine.
© 2024 CMRI Kolkata. All Rights Reserved.