জেনে নিন গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে
Home >Blogs >জেনে নিন গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে

জেনে নিন গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে

Table of Contents
  1. আপনার প্রেগন্যান্সি টেস্ট কখন করানো উচিত?
  2. প্রেগন্যান্সির শুরুর লক্ষণগুলো কী?
  3. প্রেগন্যান্সির শুরুর সাধারণ লক্ষণ (Early Pregnancy Symptoms)
  4. কম সাধারণ লক্ষণ (Less Common Symptoms)
  5. ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং ও পিরিয়ডের পার্থক্য
  6. প্রেগন্যান্সির মাসভিত্তিক লক্ষণ
  7. কখন সতর্ক হবেন –মিসক্যারেজের লক্ষণ
  8. মাসভিত্তিক গর্ভাবস্থার লক্ষণ
  9. উপসংহার
  10. FAQ is - প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন 
    1. ১. পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করবেন?
    2. ২. প্রেগন্যান্সির শুরুর লক্ষণ কবে দেখা দেয়?
    3. ৩. প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকের লক্ষণ কী কী?
    4. ৪. প্রথম মাসে কী হয়?
    5. ৫. প্রেগন্যান্ট হলে কি পিরিয়ড হয়?
    6. ৬. পিরিয়ডের পরও কি প্রেগন্যান্ট হওয়া যায়?
    7. ৭. প্রেগন্যান্সি কীভাবে হয়?
    8. ৮. প্রেগন্যান্সির লক্ষণ থাকলেও কি গর্ভধারণ নাও হতে পারে?
    9. ৯. প্রেগন্যান্সি কনফার্ম করবেন কীভাবে?
    10. ১০. প্রথম মাসে কীভাবে যত্ন নেবেন?
    11. ১১. পিরিয়ডের কতদিন পরে গর্ভধারণ হয়?
    12. ১২. প্রেগন্যান্সি চেক করবেন কীভাবে?
    13. ১৩. প্রেগন্যান্সির সময় বসার সঠিক ভঙ্গি কী?
    14. ১৪. প্রেগন্যান্সির সময় যৌন সম্পর্ক করা যায় কি?
    15. ১৫. প্রেগন্যান্সির সময় কোন ফল খাবেন?
    16. ১৬. প্রেগন্যান্সির সময় কত পানি খাবেন?

Summary

বমি বমি ভাব, বমি হওয়া এবং মুখের স্বাদ বদলে যাওয়া — এগুলো প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকের লক্ষণ। তবে আরও কিছু লক্ষণ আছে, যা গর্ভধারণের ইঙ্গিত দিতে পারে। আপনি যদি গর্ভাবস্থার শুরুর লক্ষণগুলো জানতে চান, তাহলে এই ব্লগটি আপনার সাহায্য করবে।

মা হওয়ার সুখ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুখ। প্রেগন্যান্সির সময় একজন নারীর শরীরে অনেক শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনগুলোই প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকের লক্ষণ, যা প্রতিটি নারীর জানা জরুরি।

গর্ভধারণ নিয়ে যেকোনো সমস্যার জন্য আমরা আপনাকে পরামর্শ দেব যে, আমাদের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং সব ধরনের জটিলতা দূর করুন। আপনি যদি প্রেগন্যান্সির শুরুর লক্ষণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে এই ব্লগ আপনার জন্যই।

আপনার প্রেগন্যান্সি টেস্ট কখন করানো উচিত?

  • প্রেগন্যান্সি টেস্টের জন্য সেরা সময় হলো অন্তত একবার পিরিয়ড মিস হওয়ার ৭ দিন পর
  • আপনি বাড়িতেই হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট দিয়ে HCG হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন।
  • প্রেগন্যান্সির সময় এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • খুব তাড়াতাড়ি টেস্ট করলে ভুল ফল আসতে পারে। তাই যদি পিরিয়ড লেট হয় এবং টেস্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে অন্তত ৩ দিন অপেক্ষা করুন এবং আবার টেস্ট করুন।
  • টেস্ট কিটের নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ুন।
  • সঠিক ফলাফলের জন্য সকালে প্রথম প্রস্রাব দিয়ে টেস্ট করুন, কারণ তখন HCG হরমোনের মাত্রা সঠিকভাবে মাপা যায়।
  • যদি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ থাকে কিন্তু টেস্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে গিয়ে ব্লাড টেস্ট করান।

প্রেগন্যান্সির শুরুর লক্ষণগুলো কী?

প্রেগন্যান্সির সময় নারীদের শরীরে অনেক হরমোনজনিত পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে—

  • বমি বমি ভাব
  • বমি হওয়া
  • বারবার প্রস্রাব হওয়া
  • ক্লান্তি
  • এসব অন্যতম, যেগুলো নিয়ে আমরা নিচে আলোচনা করব।

প্রেগন্যান্সির প্রথম কয়েক দিনে ডিম্বাণু শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হয়, ফলে হালকা রক্তপাত ও পেট ব্যথা হতে পারে। এই সময়ে সুস্থ প্রেগন্যান্সির জন্য নারীদের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এতে মা ও শিশুর ক্ষতি হতে পারে।

প্রেগন্যান্সির শুরুর সাধারণ লক্ষণ (Early Pregnancy Symptoms)

  1. পিরিয়ড মিস হওয়া (Missed Period)

    • এটি গর্ভাবস্থার সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রথম লক্ষণ।
    • গর্ভধারণের পর HCG হরমোন তৈরি হয়, যা ওভুলেশন এবং পিরিয়ড বন্ধ করে দেয়।
    • তবে স্ট্রেস, অতিরিক্ত ব্যায়াম, ওজন পরিবর্তন বা হরমোনের সমস্যা থেকেও পিরিয়ড মিস হতে পারে।
    • এক সপ্তাহ বা তার বেশি দেরি হলে হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট বা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  2. বারবার প্রস্রাব হওয়া (Frequent Urination)

    • গর্ভধারণের পর রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়, ফলে কিডনি বেশি কাজ করে এবং ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
  3. ক্লান্তি ও দুর্বলতা (Fatigue)

    • প্রোজেস্টেরন হরমোন বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রথম ত্রৈমাসিকে বেশি ক্লান্তি লাগে।
    • দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে এটি কিছুটা কমে যায়, তবে শেষের দিকে আবার বাড়তে পারে।
  4. বমি বমি ভাব ও বমি (Nausea & Vomiting)

    • এটি সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞাসিত লক্ষণ।
    • "মর্নিং সিকনেস" বলা হলেও দিনের যেকোনো সময় হতে পারে।
    • প্রায় ৫০% নারীর এই লক্ষণ থাকে।
    • যদি ক্রমাগত বমি হয় বা শরীরে পানির অভাব হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তার দেখান।
  5. স্তনে পরিবর্তন (Breast & Nipple Changes)

    • গর্ভধারণের পর স্তনে ফোলা, ব্যথা, রঙ গাঢ় হওয়া, সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া হতে পারে।
  6. পেট ব্যথা বা ফোলা (Cramping & Bloating)

    • জরায়ুর বৃদ্ধি ও হরমোন পরিবর্তনের কারণে হালকা ব্যথা বা গ্যাস হতে পারে।
  7. মুড পরিবর্তন (Mood Swings)

    • হরমোন পরিবর্তনের কারণে হঠাৎ মুড বদলে যেতে পারে—রাগ, দুঃখ, আনন্দ ইত্যাদি।

কম সাধারণ লক্ষণ (Less Common Symptoms)

  • ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং (Spotting) – গর্ভধারণের ১০-১৪ দিন পর হালকা রক্তপাত হতে পারে।
  • খাবারের প্রতি আকর্ষণ বা বিতৃষ্ণা।
  • মুখে ধাতব স্বাদ।
  • মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা।
  • নাক বন্ধ বা ঠান্ডার মতো অনুভূতি।
  • ত্বকের পরিবর্তন – কখনো উজ্জ্বলতা, কখনো ব্রণ।

ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং ও পিরিয়ডের পার্থক্য

  • ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং সাধারণত হালকা, গোলাপি বা বাদামী হয়, ১–২ দিন স্থায়ী হয় এবং পিরিয়ডের চেয়ে কম হয়।
  • পিরিয়ডের রঙ গাঢ় লাল, প্রবাহ বেশি এবং সময় বেশি (৩–৭ দিন)।

প্রেগন্যান্সির মাসভিত্তিক লক্ষণ

  • ১ম মাস: স্তনে ফোলা, ব্যথা, রঙের পরিবর্তন।
  • ২য় মাস: খাবারের রুচি বদল, পছন্দ-অপছন্দ পরিবর্তন।
  • পরবর্তী মাসগুলোতে: বুক জ্বালা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘ্রাণশক্তি বৃদ্ধি।

কখন সতর্ক হবেন –মিসক্যারেজের লক্ষণ

  • প্রথম তিন মাসে ঝুঁকি বেশি।
  • বেশি রক্তপাত, তীব্র পেটব্যথা, পিঠে ব্যথা সতর্ক সংকেত।
  • অতিরিক্ত তরল বের হওয়া, গাঢ় রক্তপাত, তীব্র ব্যথা হলে দ্রুত ডাক্তার দেখান।

মাসভিত্তিক গর্ভাবস্থার লক্ষণ

গর্ভাবস্থার অগ্রগতির সাথে সাথে এর লক্ষণগুলি লক্ষণীয় হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে, স্তন ফুলে যাওয়া, ব্যথা এবং স্তনবৃন্তের রঙের পরিবর্তনের মতো লক্ষণগুলি লক্ষ্য করা যায়। দ্বিতীয় মাসে, ক্ষুধা, খাওয়ার পছন্দ এবং অভ্যাসের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। আসুন একটি টেবিলের সাহায্যে প্রতি মাসে পরিলক্ষিত লক্ষণগুলি বোঝার চেষ্টা করি।

মাস

লক্ষণসমূহ

প্রথম

স্তনের ফোলা, ক্লান্তি, বমি।

দ্বিতীয়

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন।

তৃতীয়

ওজন বৃদ্ধি, পেটের আকার বৃদ্ধি।

চতুর্থ

ভ্রূণের নড়াচড়া, মুখের উজ্জ্বলতা।

পঞ্চম

ভ্রূণের নড়াচড়া আরও শক্তিশালী, ক্লান্তি বৃদ্ধি।

ষষ্ঠ

কিডনির ব্যথা, শ্বাসকষ্ট।

সপ্তম

নিম্ন পেট ব্যথা, হাত-পায়ে ফোলা।

অষ্টম

অস্বস্তি, শারীরিক নড়াচড়া।

নবম

নিয়মিত ডাক্তার পরিদর্শন।

উপসংহার

গর্ভধারণের লক্ষণ অনেক সময় পিরিয়ডের মতো হতে পারে। তাই নিশ্চিত হতে প্রেগন্যান্সি টেস্ট ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

FAQ is - প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন 

১. পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করবেন?

নিয়মিত সাইকেলে প্রথম দিন থেকেই টেস্ট করতে পারেন। অনিয়মিত হলে ৭–১০ দিন অপেক্ষা করুন।

২. প্রেগন্যান্সির শুরুর লক্ষণ কবে দেখা দেয়?

সাধারণত গর্ভধারণের ৬–৪১ দিনের মধ্যে। কিছু নারীর ক্ষেত্রে ২–৩ সপ্তাহ পরে।

৩. প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকের লক্ষণ কী কী?

  • বমি বমি ভাব, বমি
  • স্তনে ব্যথা ও সংবেদনশীলতা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফোলা
  • ক্লান্তি
  • বারবার প্রস্রাব
  • মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা

৪. প্রথম মাসে কী হয়?

ভ্রূণের বৃদ্ধি শুরু হয়, আকার বিনের দানার মতো। অঙ্গ ও টিস্যুর গঠন শুরু হয়।

৫. প্রেগন্যান্ট হলে কি পিরিয়ড হয়?

না। পিরিয়ড মানে জরায়ুর আস্তরণ ঝরে পড়া, যা গর্ভাবস্থায় হয় না।

৬. পিরিয়ডের পরও কি প্রেগন্যান্ট হওয়া যায়?

হ্যাঁ, পিরিয়ড চলাকালীন বা পরেই অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক হলে।

৭. প্রেগন্যান্সি কীভাবে হয়?

ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনে ভ্রূণ গঠিত হয়, যা জরায়ুতে বৃদ্ধি পায়।

৮. প্রেগন্যান্সির লক্ষণ থাকলেও কি গর্ভধারণ নাও হতে পারে?

হ্যাঁ, কিছু লক্ষণ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে।

৯. প্রেগন্যান্সি কনফার্ম করবেন কীভাবে?

প্রথমে হোম টেস্ট, তারপর পজিটিভ হলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ।

১০. প্রথম মাসে কীভাবে যত্ন নেবেন?

সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি, ভারী কাজ এড়ানো, হালকা ব্যায়াম।

১১. পিরিয়ডের কতদিন পরে গর্ভধারণ হয়?

ওভুলেশনের সময় (শেষ পিরিয়ডের ১০–১৪ দিন পরে)।

১২. প্রেগন্যান্সি চেক করবেন কীভাবে?

HCG টেস্ট — বাড়িতে কিট দিয়ে বা ব্লাড টেস্টে।

১৩. প্রেগন্যান্সির সময় বসার সঠিক ভঙ্গি কী?

পিঠ সোজা, কাঁধ রিল্যাক্স, পা মাটিতে সমানভাবে রাখা।

১৪. প্রেগন্যান্সির সময় যৌন সম্পর্ক করা যায় কি?

হ্যাঁ, যদি ডাক্তার কোনো সমস্যা না বলেন।

১৫. প্রেগন্যান্সির সময় কোন ফল খাবেন?

কলা, কমলা, আপেল, জ্যামুন — তবে কাঁচা বা না-ধোয়া ফল এড়িয়ে চলুন, পেঁপে ও আনারস সীমিত পরিমাণে।

১৬. প্রেগন্যান্সির সময় কত পানি খাবেন?

প্রতিদিন অন্তত ৮–১২ গ্লাস (২–৩ লিটার), গরমে বা কাজের সময় বেশি।

Written and Verified by:

Dr. Parnamita Bhattacharya

Dr. Parnamita Bhattacharya

Senior Consultant Exp: 20 Yr

Obstetrics and Gynaecology

Book an Appointment

Dr. Parnamita Bhattacharya is associated with CMRI as senior consultant gynaecologist and obstetrician.

Related Diseases & Treatments

Treatments in Kolkata

Obstetrics and Gynaecology Doctors in Kolkata

NavBook Appt.WhatsappWhatsappCall Now