অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং ভুল খাবার খাওয়ার কারণে অনেক রকম রোগ হয়ে থাকে।পাইলস বা অর্শ তেমনই একটি রোগ।হেমোরয়েডস-এর অন্য নামও আছে যার মধ্যে রয়েছে পাইলস বা অর্শ, হেমোরয়েড, অর্শের উপমাংস ইত্যাদি।এই ব্লগে আমরা বিশদে আলোচনা করব হেমোরয়েডসের উপমাংসকে কীভাবে শুকিয়ে ফেলা যায় কীভাবে।
অর্শ্বরোগ শুকানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এমন বেশ কয়েকটি ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে। অনেক চিকিত্সার মধ্যে অর্শ্বরোগের লক্ষণগুলি হ্রাস করা অন্তর্ভুক্ত যদি সেগুলি নিজেরাই শুকিয়ে না যায়। যদি ঘরোয়া প্রতিকারগুলি অর্শ্বরোগ থেকে মুক্তি না দেয়, তাহলে একজন জেনারেল সার্জনের সাথে পরামর্শ করার পরে, পাইলসের চিকিত্সার চেষ্টা করা উচিত।
বাড়িতেই অর্শের চিকিৎসার উপায় হল গামলায় গরম জল ঢেলে নিয়ে তার ওপর বসা। এতে ফোলা কমতে পারে এবং অর্শের জ্বালা ভাবটাও কমতে পারে। কেউ কেউ গরম জলে আরও অনেক কিছু মেশান যাতে অর্শের লক্ষণগুলি আরও কমে। এই সব উপকরণের মধ্যে থাকতে পারে এক কাপ অ্যাপসাম সল্ট কিংবা আপেল সিডার ভিনেগার।
পাইলসের ওপর বরফ কিংবা আইস প্যাক দিলে যন্ত্রণা ও ফোলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। হেমোরয়েডসে আইস প্যাক ব্যবহার করলে ব্যথা ভাবটা চলে গিয়ে জায়গাটা অসাড় হয়ে যেতে পারে। এবং সাময়িকভাবে ফোলা কমে যেতে পারে। চামড়া ও ত্বকের ক্ষতি আটকাতে হলে বরফটাকে ছোট তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে নিতে হবে। টানা ১৫ মিনিট আইস প্যাক নেওয়া যায়। এই প্রক্রিয়াটি প্রতি ঘণ্টায় চালিয়ে যেতে হবে।
জার্নাল অফ ইনফ্ল্যামেশনে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী,উইচ হ্যাজেল ঝোপের পাতায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ফোলা কমানোর গুণ রয়েছে। উইচ হ্যাজেলের পাতাক্ষত নিরাময় করে বলেও লোকে জানে। খাঁটি উইচ হ্যাজেলের পাতার রস তুলোয় মিশিয়ে অর্শের ওপর চেপে ধরলে অনেক উপসর্গ থেকেই উপশম পাওয়া যায়।
নারকেল একটা প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন ময়েশ্চারাইজার। হেমোরয়েডের উপসর্গের চিকিৎসায় এটা কাজে লাগে। হেমোরয়েডে নারকেল তেল লাগালে জ্বালা ও ফোলা দুটোই কমতে পারে।মলদ্বারে চুলকানির সম্ভাবনাও কমাতে পারে নারকেল তেল।
অ্যালো ভেরা বহু রকম সমস্যা মেটাতে কাজে লাগে। বায়োমেড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনালের গবেষণা অনুযায়ী, এই পাতার রসে শরীরের ফোলা কমে এবং ক্ষত শুকাতেও সাহায্য করে। মলদ্বারে অ্যালো ভেরার রস লাগালে হেমোরয়েডসের কারণে সৃষ্টি হওয়া জ্বালা, চুলকানি ও ফোলা থেকে উপশম পাওয়া যায়।
যদি অর্শ সাধারণ চিকিৎসায় না সারে কিংবা ব্যথা খুব তীব্র হয়, তাহলে কড়া ডোজের ওষুধ কিংবা ক্রিমে অনেকটা আরাম হতে পারে।স্টেরয়েড নয়, এবং ফোলা আটকাতে পারে এমন ড্রাগ (এনএসএআইডি), যেমন অ্যাসিটামিনোফেন বা আইবুপ্রোফেনে কাজ হতে পারে। হাইড্রোকর্টিসোন রয়েছে এমন ক্রিম চামড়ার ওপর লাগালে সাময়িক স্বস্তি মিলতে পারে।তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করেই পাইলসের ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।
যদি হেমোরয়েডস প্রাথমিক পর্বে থাকে, তাহলে ওষুধের সাহায্যে এবং জীবনযাত্রার ধরন বদলে ফেলে হেমোরয়েডস সারিয়ে ফেলা যায়। তবে অর্শ গুরুতর জায়গায় পৌঁছে গেলে, চিকিৎসকেরা লেসার সার্জারির করার পরামর্শ দেন। লেসার সার্জারির সাহায্যে অর্শকে একেবারে নির্মূল করে ফেলা যায়।
উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার, বেশি করে ফলমূল, শাকসবজি, গোটা শস্য খান। এই রোগের স্বাভাবিক চিকিৎসা দিতে হবে। হাইড্রোকর্টিসোনযুক্ত হেমোরয়েড ক্রিমগুলি এলাকাটি অসাড় করার জন্য হ্যাজেল পাতাযুক্ত প্যাডের সাথে ব্যবহার করা উচিত। গরম পানির পাত্রে বসতে হবে। একজন জেনারেল সার্জন সাথে পরামর্শ করে ব্যথা উপশমকারী বড়ি সেবন করা যেতে পারে।
উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে মল নরম হবে ও মলত্যাগ সহজ হবে। এতেই অর্শের চিকিৎসা এবং অর্শকে ঠেকানো সহজ হবে। বেশি করে জল, ফলের রস, সাধারণ স্যুপ খেলে তা খাদ্যতালিকায় থাকা ফাইবারের পক্ষে আরও বেশি সহায়ক হবে।
চিকিৎসকেরা বলেন অর্শ হলে কিছু জিনিস খাওয়া উচিত নয়। এর মধ্যে পড়ে চিজ, চিপস, ফাস্ট ফুড, আইসক্রিম, মাংস, বরফে জমানো নোনতা খাবার, প্রক্রিয়াকরণজাত খাদ্য, যেমন হটডগস এবং মাইক্রোওয়েবে গরম করা খাবার। হেমোরয়েডস হলে সিগারেট, অ্যালকোহল, গুটখা ইত্যাদি চলবে না।
© 2024 CMRI Kolkata. All Rights Reserved.