ডেঙ্গু এবং ডেঙ্গু জ্বর হল উপ-ক্রান্তীয় এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের গ্রীষ্ম-প্রধান দেশগুলিতে খুব সাধারণ ভেক্টর-বাহিত ভাইরাল রোগ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, ল্যাটিন আমেরিকা এবং আফ্রিকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। ভারতে এই রোগের প্রকোপ প্রধানত প্রাক-গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বৃদ্ধি পায়।
উপক্রান্তিয় এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলের গ্রীষ্ম-প্রধান দেশে ডেঙ্গু এবং ডেঙ্গু জ্বর একটি অত্যন্ত সাধারণ ভেক্টর-বাহিত ভাইরাসঘটিত রোগ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, ল্যাটিন আমেরিকা এবং আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। ভারতবর্ষে প্রধানত প্রাক-গ্রীষ্ম এবং বর্ষা সময় এই রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। ডেঙ্গু সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি থাকে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত যায়। এপ্রিল মাসে এই হাড় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। জুন-জুলাই মাস থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সাধারণত হ্রাস পেতে দেখা যায়।
ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অংশেও এর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটে। সময় এবং অঞ্চল-বিশেষে এই রোগ মহামারির আকারও ধারণ করে। বিনা চিকিৎসায়, ভুল চিকিৎসায়, এবং দেরিতে চিকিৎসার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের কোন বিশেষ লক্ষণ দেখা নাও যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসায় বাড়ি তে থেকেই এই রোগের নিরাময় করা সম্ভব। শুধুমাত্র বিশেষ কিছু ক্ষেত্রেই রোগীকে হসপিটালে ভর্তির প্রয়োজন হয়। সেই ক্ষেত্রেও 1–2 সপ্তাহের মধ্যে রোগী ভাল হয়ে যাওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা থাকে। এই রোগ সম্বন্ধে জনমানসে সচেতনতা বৃদ্ধি ভীষণ জরুরী। সামান্য কিছু উপায় মেনে চললে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করেতে পারি। এই রোগ লোকালয়ে ছড়িয়ে পরার হাত থেকে সহজেই নিষ্কৃতি পাওয়া যায়।
ডেঙ্গু জ্বর হল একটি মশা-বাহিত ভাইরাস-ঘটিত রোগ। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে প্রথমবার ডেঙ্গু-তে আক্রান্ত রোগীর বিশেষ কোন উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায় না। শুধু অল্প কিছু ক্ষেত্রেই রোগের প্রভাব গভীর হয়। ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গ গুলি হোল -
এই উপসর্গ গুলি রোগ সংক্রমণের 4 থেকে 10 দিনের মধ্যে দেখা দেয়। সাধারণত 2 থেকে 7 দিন পর্যন্ত উপসর্গ স্থায়ী হতে পারে। দ্বিতীয় বার ডেঙ্গু তে আক্রান্ত হলে রোগের ভয়াভয়তা বৃদ্ধি পায়। সেই কারনে পূর্বে ডেঙ্গু তে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে চলতে বলা হয়।
ডেঙ্গুর জীবাণু মানুষের শরীরের রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে রক্তনালীতে ছিদ্র তৈরি হয়। রক্ত রবাহে ক্লট-তৈরির কোষগুলির (প্ল্যাটলেট) সংখ্যা কমে যেতে থাকে। এর জন্য মানুষের শরীরে শক লাগা, শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তপাত, যে কোন অঙ্গের ক্ষতি এবং শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে। রোগীর শরীরে গুরুতর উপসর্গ গুলির কোন একটি দেখা দিলে অতি অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত বা রোগী কে নিকটবর্তী হসপিটালে ভর্তি করানো দরকার। অন্যথায় রোগীর প্রাণসংকট হতে পারে।
স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সম্পন্ন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের প্লেটলেট সংখ্যা হয় 150,000 থেকে 450,000 প্লেটলেট প্রতি microliter রক্তে। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের এই সংখ্যা 20,000 এর নিচে চলে যেতে পারে। এই সময় রক্তপাতের ঝুঁকি সর্বোচ্চ হয়। মাঝারি ঝুঁকি পূর্ণ রোগীদের প্লেটলেট সংখ্যা 21-40,000/cumm মধ্যে থাকে। অবশ্য ডেঙ্গু সংক্রমণে অনেক ক্ষেত্রেই প্লেটলেট সংখ্যার দ্রুত পরিবর্তন হয়। প্লেটলেট কাউন্ট কম এবং রক্তক্ষরণের লক্ষণ প্রকাশ পেলে তবেই প্লেটলেট প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। অন্যথায় সংক্রমণ কমার সাথে সাথে আমাদের শরীরে স্বাভাবিক ভাবে প্লেটলেট কাউন্ট বৃদ্ধি পায়। এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ফোলেট এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহন।
ডেঙ্গুর চিকিৎসার বিশেষ কোন ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। গবেষকরা কাজ করে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘরোয়া চিকিৎসাতেই কমে যায়। চিকিৎসকরা পেরাসিটামিল জাতীয় ওষুধ দিয়ে যন্ত্রণা এবং জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেন। Non-steroidal প্রদাহ-প্রতিরোধী ওষুধের রক্ত ক্ষরণের সম্ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রোগের মাত্রা অতিরিক্ত ভাবে বৃদ্ধি পেলে রোগী কে হসপিটালে ভর্তি এবং ডাক্তারি নজরদারি তে রাখা একান্ত জরুরী। হসপিটালে ডেঙ্গু রোগীদের শিরায় (IV) ইলেক্ট্রোলাইট (লবণ) তরল দেওয়া হয়। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় জল এবং লবণের যোগান বজায় থাকে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের জন্য, কিছু পুষ্টি উপাদান বিশেষ ভাবে উপকারী হতে পারে, যেমন
সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল পান করা দরকার শরীর কে হাইড্রেট করার জন্য।
সহজে হজম হয়না এমন খাবার ডেঙ্গু রোগী দের খাওয়া উচিত নয়। যেমন -
ডেঙ্গু একটি মশা-বাহিত রোগ। তাই মশার কামড়ের হাত থেকে নিজেকে এবং আপনার পরিবার কে বাঁচান।
বাড়ির চারপাশে জল জমতে দেবেন না। জমা জলে মশারা বংশবিস্তার করে। জল জমতে না দিয়ে মশার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সপ্তাহে অন্তত একবার জল জমতে পারে এমন জায়গা পর্যবেক্ষণ করুন। এবং গাছের টব, ফুলদানি, পরে থাকা গাড়ির টায়ারের জমে থাকা জল ফেলে দিন।
ডেঙ্গু জ্বর একটি সাধারণ রোগ। কিন্তু অবহেলা করলে এই রোগ মারাত্মক হতে পারে। শহরাঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি। তাই নগরবাসীকে আরেকটু সজাগ ও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে যাদের ডেঙ্গু হয়েছে তাদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। দ্বিতীয় ডেঙ্গু সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং ভালো থাকুন। প্রয়োজনে আপনার অভ্যন্তরীণ ওষুধের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
Written and Verified by:
Similar Blogs
Stay Hydrated in Summers: How to Keep Everyone Hydrated, from Kids to Seniors
read moreडेंगू में खुजली: कारण, तुरंत इलाज और घरेलू उपचार
read moreमलेरिया के शुरुआती लक्षण और बचाव के तरीके | कारण और उपचार
read moreन्यूट्रोफिल्स क्या है और इसके बढ़ने का कारण और उपचार
read moreBook Your Appointment TODAY
© 2024 CMRI Kolkata. All Rights Reserved.